আমরা প্রায় সবাই চা পান করি। অনেকের সকাল শুরু হয় গরম চায়ের পেয়ালা হাতে নিয়ে। চায়ের সঙ্গে বিস্কুট বাড়িয়ে দেয় নাস্তার স্বাদ। কিন্তু জানেন কি- এই অভ্যাস কতটা ক্ষতিকর? ছোট এই অভ্যাস মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

চায়ের সঙ্গে বিস্কুট খেলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ওজনাধিক্য, পেটের নানাবিধ সমস্যা, হজমের সমস্যা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। এ প্রসঙ্গে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ জাহানারা আক্তার সুমি।

সুমি জানান, দুধ চা এবং বিস্কুট একসঙ্গে খেলে শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যায় যা আমাদের প্রতিদিনের ক্যালরির চাহিদার সঙ্গে যোগ করা হলে দেখা যাবে প্রতিদিন যতটুকু ক্যালরির প্রয়োজন তার চেয়ে অনেক বেশি ক্যালরি গ্রহণ করে ফেলছি। এটি ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ।

তিনি আরও বলেন, বিস্কুট তৈরির মূল উপকরণ ময়দা, চিনি, দুধ এবং তেল। সঙ্গে কিছু প্রিজারবেটিভ ও ফ্লেভার যোগ করা হয়। বিস্কুটে সাধারণত রিফাইন্ড ময়দা ব্যবহার করা হয় যাতে ফাইবার থাকে না। রিফাইন্ড করার সময় ময়দার ফাইবারের সঙ্গে শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভিটামিন ও মিনারেল নষ্ট হয়। যেগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চিনির গ্লুকোজ পরিপাকতন্ত্রের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিস্কুট তৈরিতে যে তেল ব্যবহার করা হয় সেটা স্যাচুরেটেড ফ্যাট অথবা ট্রান্সফ্যট যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। রক্তে কোলেস্টেরল, এলডিএল-এর পরিমাণও বাড়ায়। ময়দায় রয়েছে গ্লুটোন যা অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে হজম শক্তি নষ্ট হতে পারে। আবার কিছু বিস্কুট লবণাক্ত। এতে প্রচুর সোডিয়াম ব্যবহার করা হয় যা হার্টের অসুস্থতার জন্য দায়ী। এ ছাড়াও প্রিজারবেটিভ বা আর্টিফিসিয়াল ফ্লেবার মানব শরীরের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে বলে জানান জাহানারা আক্তার।

চায়ের সঙ্গে বিস্কুট না-খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে এই পুষ্টিবিদ বলেন, যারা দিনে কয়েকবার চা দিয়ে বিস্কুট খাচ্ছেন তারা বিস্কুটের পরিবর্তে বাদাম, তিল, তিসি এ ধরনের মিক্সড শুকনা বীজ জাতীয় খাবার খেতে পারেন। আর যদি খেতেই হয় তবে অবশ্যই কেনার সময় বিস্কুট তৈরির উপাদানগুলো দেখে নিতে হবে।