অধ্যাপক রায়হান উদ্দিন
৫ ই সেপ্টেম্বর আমাদের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। শিক্ষক দিবস হলো শিক্ষকদের সম্মানার্থে পালিত একটি বিশেষ দিবস যা বাংলাদেশ এবং ভারতসহ পৃথিবীর বহু দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে উদযাপিত হয়। এদিন শিক্ষকদেরকে তাদের নিজস্ব কর্মক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য সম্মাননা দেয়া হয়।
ভিন্ন ভিন্ন দিনে উদযাপিত হলেও সেপ্টম্বরের ৫ তারিখ ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত বিশ্ব শিক্ষক দিবস। কারন ৫ ই সেপ্টেম্বরকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। এই দিনের মাধ্যমে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাকে ভালোবাসা প্রদর্শন করা হয়।
বলা হয়ে থাকে, একজন মা জন্ম দেন,কিনতু সত্যিকারের একজন শিক্ষক জীবন দান করেন। কারন শিক্ষা ছাড়া একজন জীবন মৃতপ্রায়। তাই একজন শিক্ষকের একজাম্পলটা মোমবাতির সঙ্গে করা যায়।“A good Teacher is like a Candle, it consume itself to light the way for others.”একটি মোমবাতি যেমন নিজে পুড়ে অন্যের পথ প্রদর্শন করে,ঠিক সেরকম একজন শিক্ষক সারা জীবন তার মেধা, প্রজ্ঞার মাধ্যমে অন্যের পথ আলোকিত করেন।বলতে হয় “ A teacher takes a hand, open a mind and touches a heart.
শিক্ষকতার পেশা খুব সম্মানিত এক পেশা। কারন শিক্ষকরা পৃথিবীর সমস্থ পেশার লোকদেরকে তৈরি করেন।তাইতো বলা যায়,“Teaching is the profession that creates all the other professions.”তাই সত্যিকার অর্থে বলা যায় ,“Teachers are the backbone of any country, the pillar upon which all aspiration are converted into realities.”কারন শিক্ষকরা হচ্ছেন সমাজের মেরুদন্ড। তারাই পারেন একটি সমাজকে সঠিক ভাবে পরিচালিত করতে। সমাজের সন্তানদের সঠিক পথে নিয়ে যেতে। তাদের সুনাগরিক এবং সঠিক মানুষ হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিস্ঠিত করতে।
চলুন দেখে নিই আজকের দিনটিকে ৫ ই সেপ্টেম্বারকে শিক্ষক দিবস হিসেবে সেলিব্রেট কেন করা হয়।এই দিনটিকে জানতে হলে জানতে হবে ড: সর্বপল্লি রাধা কৃ্ষনানের কথা।ড: সর্বপল্রিরাধা কৃষনান ১৮৮৮ সালে ৫ই সেপ্টেমাবার ভারতের মাদ্রাজে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম উপরাস্ট্রপতি এবং ২য় রাস্ট্রপতি।ড: সর্বপল্রি রাধা কৃষনান ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত উজ্জল একটি দৃষ্টান্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন বিচক্ষন দার্শনিক। তিনি ছিলেন একজন সফল রাজনীতিক এবং তার সর্বোপরি যে উদাহরণটা আমরা বলতে পারি, তিনি ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক।
তিনি বিশ্বাস করতেন ~ Teacher should be the best mind in the Country ”অর্থাৎ দেশের সবচেয়ে সেরা মস্তিস্ক হচ্ছেন এই শিক্ষকরা। কারন শিক্ষকরাই তৈরি করেন আগামির ভবিষ্যত, আগামির দেশ। ১৯৬২ সালে ড: সর্বোপল্লি রাধা কৃষনানের কিছু গুনগ্রাহি ছাত্র ছাত্রীরা এসে বল্লেন, “ স্যার আমরা আপনার জন্মদিনকে সেলিব্রেট করতে চাই। ড: সর্বোপল্লি রাধাকৃষনা্ন উত্তরে বলেছিলেন, Instead of celebrating my birthday it would be my proud privilege if September 5th is observed as Teachers day.অর্থাৎ তিনি বলেছিলেন তোমরা যদি আমার এই বার্থডে সেলিব্রেট না করে ৫ ই সেপ্টেম্বরকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন কর, তাহলে এটি আমার কাছে একটি অত্যন্ত গর্বের বিষয় হবে।
১৯৬২ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত ড: সর্বপল্লি রাধাকৃষনানের জন্মদিনকে শিক্ষক দিবস হিসেবে সাড়ম্বরতার সাথে পালন করা হয়ে থাকে। কিন্তু একদিনের ভালোবাসা সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে কি সত্যিকারের সম্মান ভালোবাসা প্রদর্শন করা হয় আমাদের শি্ক্ষক মহলের প্রতি? কারন একটা্ দিন তাঁদের সম্মানের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই আমি মনে করি শিক্ষকদের বছরের ৩৬৫ দিনই শিক্ষক দিবস হিসেবে সম্মান দেওয়া উচিত। কারন একজন শিক্ষক তিনি একদিনের জন্য নয় , তিনি সারাজীবনের জন্য শিক্ষক।বর্তমান সময়ে ছাত্রছাত্রিরা অনেক বেশী ডেসপারেইট। তারা অনেক সময় শিক্ষকদের মেন্টাল এবং ফিজিক্যাল টর্চার করে থাকেন। যেটা মোটেও কাম্য নয়।
আজকের এই সংক্ষিপ্ত লেখাটি ড: সর্বপল্লির একটি উদ্ধৃতি দিয়ে শেষ করছি, “A life of joy and happiness is possible only on the basis of knowledge and science.