সিবিএন ডেস্ক:
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি চট্টগ্রামে প্রথম সমাবেশ করছে সোমবার (১ জুলাই)। সমাবেশ ‘সফল’ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় বিএনপি। এতে রেকর্ডসম লোকসমাগমের আশা বুনছেন নেতারা! তবে সমাবেশস্থল খোলা মাঠের পরিবর্তে ‘ছোট’ হওয়ায় উপস্থিতি ‘আশানুরূপ’ না হওয়ার কথা বলছেন অনেকে। যদিও সমাবেশে নিজেদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দেখাতে চায় দলটি।

এদিকে, সম্প্রতি নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্র। কিন্তু শিগগিরই নতুন কমিটি ঘোষণার আলোচনা থাকায় সোমবারের সমাবেশকে ‘মোক্ষম’ সুযোগ মনে করছেন পদপ্রত্যাশীরা। তাই ওই সমাবেশে আপন ‘শক্তি’ জানান দিতে বিশেষ শোডাউন করবেন তারা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা যে যার মতো প্রস্তুতিও সেরেছেন বলে জানা গেছে।

নতুন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ, নাজিমুর রহমান, এস এম সাইফুল আলম, মনজুর আলম মঞ্জু ও আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, নগর যুবদল সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি প্রমুখ।

চট্টগ্রাম বিএনপি সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার (১ জুলাই) বিকেল তিনটায় নগরের কাজীর দেউড়িতে নগর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নূর আহমেদ সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আর সভাপতিত্ব করার কথা কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ আবদুল্লাহ আল নোমানের। সমাবেশ সমন্বয় করবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।

এদিকে, নগরে নয়া কমিটি ঘোষণার আগমূহূর্তে সোমবারের সমাবেশে বিলুপ্ত কমিটির নেতা ও নতুন করে পদপ্রত্যাশীরা বিশাল শোডাউনের মাধ্যমে নিজেদের ‘শক্তিমত্তা’ দেখাতে প্রস্তুত বলে জানান সমাবেশ সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম।

রবিবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘আমরা ভালোই জমায়েত করবো। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি মিলে বিপুলসংখ্যক লোকজন জমায়েত করবে। পাশাপাশি অঙ্গ সংগঠনগুলোও সমাবেশে সক্রিয় থাকবে। এটি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ। সুতরাং বুঝতেই পারছেন জমায়েত কেমন হবে!’

সমাবেশস্থল নিয়ে জানতে চাইলে শামীম বলেন, ‘নগর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নূর আহমদ সড়কের একপাশেই সমাবেশ করার অনুমতি মিলেছে। সমাবেশস্থল রাস্তা বা ছোট আর যাই হোক; মানুষের ঢল নামবেই।’

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের (চট্টগ্রাম বিভাগ) নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিনের প্রথম কর্মসূচি সোমবারের সমাবেশ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মীর হেলাল বলেন, ‘সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর চট্টগ্রামে এটি আমার প্রথম কর্মসূচি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ হচ্ছে। সমাবেশকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সমাবেশে লোকসমাগমের কোনো নির্দিষ্ট টার্গেট নেই। তবে আমরা আশাবাদী— সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের সমাগম হবে।’

নগর বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘সমাবেশের প্রস্তুতি হিসেবে প্রতিটি ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। সব ইউনিট থেকে আমরা ভালো রেসপন্স পেয়েছি। কেন্দ্রীয় এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রতিটি ইউনিট থেকে মিছিল আসবে। আমরা সর্বোচ্চ জনসমাগম ঘটিয়ে সোমবারের জনসভা সফল করবো।’

নগর বিএনপির বিলুপ্ত কমিটিতে দপ্তরের দায়িত্ব পালন করা ইদ্রিস আলী বলেন, ‘আমরা গত দুই-তিন দিন ধরে সমাবেশে রেকর্ডসম জনসমাগম ঘটানোর জন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা করছি। তবে খোলা জায়গা বা কোনো মাঠ পাইনি। এখন নাসিমন ভবনের সামনে নূর আহমদ সড়কে সমাবেশ করতে হচ্ছে।’

‘এরপরও আমরা আশা করছি হাজার হাজার মানুষ হবে। পুলিশ আমাদের টাইলস মার্কেটের খালি জায়গা যেখানে পার্কিং করা হয়; সেখানে সমাবেশ করতে বলেছে। আমরা এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি। এরপরও যদি মানুষ বেশি চলে আসে; রাস্তায় তো নামতেই হবে!’- যোগ করেন ইদ্রিস আলী। -সিভয়েস২৪