আব্দুস সালাম,টেকনাফ:
বৈরি আবহাওয়ায় ৫৪ জন সাঁতারু পাড়ি দিলেন বাংলা চ্যানেল ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সট্রিম বাংলার বাংলার আয়োজনে ১৬তম ফরচুন বাংলা চ্যানেল সাঁতারে এবারে ৫৪জন সাঁতারু সাঁতার সম্পন্ন করেছেন। সোমবার(২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহ্পরীর দ্বীপের পশ্চিম সৈকত থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত বঙ্গোপাসাগরে ১৬.১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেলে ৭৯ জন অংশ নেন। সেন্ট মার্টিন থেকে সকালে শাহ্‌পরীর দ্বীপে পৌঁছান সাঁতারুরা। এরপর ৫০টি পতাকা নিয়ে বাংলাদেশের সূবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন করে সাঁতার শুরু করেন।
বঙ্গোপসাগরে ছিল প্রবল বাতাস ও ঢেউ। বড় বড় ঢেউ সাঁতারুদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও এত সংখ্যক সাঁতারু এর আগে একসঙ্গে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেননি। এবারে ১০ বছর বয়সী সৈয়দা লারিসা রোজেন সাঁতারে অংশ নিয়েছিল। তবে শেষ করতে পারে নি।

এবারের সাঁতারে সবার আগে সেন্টমার্টিন পৌঁছেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. সাইফুল ইসলাম রাসেল। তাঁর সময় লেগেছে ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট। এর পরপরই সাঁতার সম্পন্ন করেন মাগুরার সাঁতারু সুজা মোল্লা (৪ ঘণ্টা ১০ মিনিট)।
এরপর সাগর থেকে উঠে আসেন মো. আবু নাঈম (৪ ঘণ্টা ১৩ মিনিট)। প্রথমবারের মত সাতারে অংশে নিয়ে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সালাহ উদ্দিন ৫ম হন তিনি।
২০০৬ সালে প্রথম বাংলা চ্যানেল সাঁতার সম্পন্ন করেন এই আয়োজনের প্রধান উদ্যোক্তা সাঁতারু লিপটন সরকার। আজ ৬ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় নিয়ে টানা ১৮ বার এই চ্যানেল পাড়ি দিয়ে রেকর্ড করলেন তিনি।

বিটিভির চিত্রগ্রাহক মো. মুনিরুজ্জামান ৪ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট সময় নিয়ে সময় নিয়ে এবার ১২ বারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার সম্পন্ন করলেন। একই সময় নিয়ে আয়রনম্যান মোহাম্মদ শামছুজ্জামান আরাফাত অষ্টমবারের মতো বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন। একই সময়ে সাঁতার শেষ করেন সালাহ উদ্দিন।

৪ ঘণ্টা ১৭ মিনিট সময় নিয়ে সাঁতার শেষ করেছেন আরিফুর রহমান। ফরাসি নাগরিক সিগ ফ্রিড টানা দুইবাররের মতো এবার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন। মালয়েশিয়া আয়রনম্যান আয়োজনে আয়রনম্যান খেতাব পাওয়া ইমতিয়াজ ইলাহিও সাঁতার শেষ করেছেন।

ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী লিপটন সরকার বলেন, ‘আজ সাগর ছিল খুবই উত্তাল। ফলে নতুন সাঁতারুদের অনেকে সাঁতার সম্পন্ন করতে পারেন নি। বাংলা চ্যানলে প্রতি বছরই অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ছে। বরাবরের মতো এবারও সাঁতারুদের নিরাপত্তার সব ব্যবস্থাই ছিল।’

১৬তম বাংলা চ্যানেল সাঁতারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডের ব্র্যান্ড ফরচুন। রেসকিউ পার্টনার বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। অংশীদার হিসেবে আরও আছে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, ষড়জ, ভিসা থিং, স্টুডিও ঢাকা।

বঙ্গোপসাগরে দূরপাল্লার সাঁতার উপযোগী ১৬.১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল আবিষ্কার করেন অ্যাডভেঞ্চার গুরু প্রয়াত কাজী হামিদুল হক। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়। এবার এই আয়োজন তাঁকে উৎসর্গ করা হয়েছে।