সিবিএন ডেস্ক:
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আব্দুল আলিমসহ দুজনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে পরিচয় প্রতারণা, কম্পিউটারে বেআইনি প্রবেশসহ নানা অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে বোর্ডের বর্তমান সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী নাথ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন কোতোয়ালী থানার চকবাজার এলাকার জয়নুল আবেদীনের ছেলে মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী (৬৪)। তিনি সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত একজন শিক্ষক।

মামলার আর্জিতে বনশ্রী নাথ উল্লেখ করেছেন, তার স্বামী চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) হিসেবে দায়িত্বরত। তার ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ গত বছর অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর ওই বছরের ২৮ নভেম্বর তার ছেলে নক্ষত্র দেবনাথের এইচএসসির রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংগ্রহ করে আসামিরা অপরাধ সংঘটনের জন্য শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করেছে। যে ঘটনার পরে বাদি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন।

মামলায় তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ১ নম্বর আসামি আব্দুল আলিম বাদির ছেলের পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষা এবং তার স্বামীকে নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে । মামলার ২ নম্বর আসামিও পরপর দুইবার এমন ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন।

তিনি আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আসামিদের অংশগ্রহণে ভিকটিম নক্ষত্র দেবনাথের এইচএসসি রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংগ্রহ করে কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে অপরাধ সংঘটনের জন্য বেআইনী প্রবেশের অভিযোগ এনে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এর ১৮/২৪/২৬/৩৩ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আব্দুল আলিম বলেন, জিডির তদন্ত রিপোর্টেই আছে। সেখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। একইসাথে আমার নম্বর ব্যবহার ষড়যন্ত্রমূলক এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে কে বা কারা এ কাজ করেছে সেটি খুঁজে বের করা হোক। দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করার জন্য আমি সবসময় কথা বলি এবং বলে যাবো।

উল্লেখ্য, গেল ২৬ নভেম্বর প্রকাশিত এইচএসসির ফলাফলে কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়া শিক্ষার্থীরা ২৭ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করে। চট্টগ্রামের ২৭ হাজার ২৭২ শিক্ষার্থী উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করে। সেই আবেদনের মধ্যে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব ও সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ছেলের ছয় বিষয়ের ১২টি পত্র ছিল। সচিব বা তাঁর পরিবারের কেউ এমন আবেদন করেননি দাবি করে গত ৪ ডিসেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সচিবের স্ত্রী।

এর আগে তদন্ত কর্মকর্তার ফোন পেয়ে তাঁকে (অধ্যাপক আব্দুল আলীম) জড়িয়ে নতুন কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে এমন সন্দেহ থেকে গত ২৬ ডিসেম্বর নগরের কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। যদিও ওই প্রতিবেদনে সাবেক সচিবের পুনঃনিরীক্ষণের আবেদনে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা।