বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নে মাহফিলে বক্তব্য দেওয়ার জের ধরে লায়ন মো. আমিরুল হক এমরুল কায়েস নামের এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে গিয়ে উদ্ধারকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমরুল কায়েস আলহাজ্ব মৌলভী নজরুল ইসলাম পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী বলে জানা যায়।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) রাত ১০ টায় ছনুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম খুদুকখালী মাহবুবিয়া জামে মসজিদের পূর্ব পাশে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে লায়ন মোঃ আমিরুল হক এমরুল কায়েস বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ছনুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সালাম বলীর বাড়ীর মোস্তাক আহমদের পুত্র হারুনুর রশীদ (৫৫), পশ্চিম খুদুকখালী ৮নম্বর ওয়ার্ডের মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র গোলাম মোস্তফা ওরফে বাইশ্যা (৫৫), ৭নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম রহমান ওরফে গুলুইক্যার পুত্র নাজিম উদ্দীন প্রকাশ নাজিম ডাকাত (৪০), ছালেহ আহমদের পুত্র আবুল খায়ের (৩৫), মৃত নুরুল আলমের পুত্র রাশেদুল মনির (৩৫), ৮নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম মোস্তফা ওরফে বাইশ্যার পুত্র হুমায়ুন (৩২), ৭নম্বর ওয়ার্ডের নজির আহমদের পুত্র সরোয়ার কামাল (৪৫), আবদুল খালেকের পুত্র ছৈয়দুল মোস্তফা ওরফে বাক্কা (৪০), ৮নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম মোস্তফা ওরফে বাইশ্যার পুত্র জোনাঈদ (৩৫) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ছনুয়া উসওয়াতুন হাসানা যুব কল্যাণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত ৬ষ্ঠ তম ইসলামি মহা সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন লায়ন মোঃ আমিরুল হক এমরুল কায়েস। একই মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে দাওয়াত দেওয়া হয় ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশীদকেও। মাহফিল চলাকালীন সময়ে আয়োজক কমিটি এমরুল কায়েসের হাতে মাইকের স্পীকার হাতে দিলে তিনি বক্তব্য শুরু করেন। বক্তব্য প্রদানকালে চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদের ইন্ধনে গোলাম মোস্তফা ওরফে বাইশ্যা উত্তেজিত হয়ে মাহফিলে উপস্থিত জনতার সামনে এমরুল কায়েসের নাম ধরে অশ্রাব্য কথাবার্তা বলা শুরু করেন। এসময় বাইশ্যাকে গালিগালাজ ও মানহানি না করার জন্য অনুরোধ করলে চেয়ারম্যান হারুনের ইন্ধনে গোলাম মোস্তফা ওরফে বাইশ্যা এমরুল কায়েসের দিকে মারতে তেড়ে আসেন। মাহফিলে উপস্থিত ছনুয়া ৮নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক ও ভুক্তভোগী এমরুল কায়েসের সাথে থাকা লোকজন গোলাম মোস্তফার কবল থেকে উদ্ধার করে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় এমরুল কায়েস তার প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজনকে খবর দেন তিনি।
ঘটনার দিন রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটে পরিবার ও প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হন। এসময় তারা আবদুল্লাহর দোকান এলাকার পশ্চিম পাশে পৌঁছলে পূর্ব থেকে ওঁতপেতে থাকা চেয়ারম্যান হারুন ও সকল বিবাদীরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এমরুল কায়েস ও তার সঙ্গীয় লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বিবাদীগণ এমরুল কায়েসের সঙ্গীয় লোকজনকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখনপ্রাপ্ত করে ফেলে।
ভুক্তভোগী এমরুল কায়েসকে উদ্ধার করে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হকের বাড়িতে আশ্রয় প্রদান করায় চেয়ারম্যান হারুন মোজাম্মেলকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে জখম করে। এসময় চেয়ারম্যান হারুন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার জন্য ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আতংক সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে আবদুল্লাহর দোকান এলাকার পশ্চিম পাশে হারুন্যা বর বাড়িতে ঢুকে পড়েন এমরুল কায়েস এবং আইনী সহায়তার জন্য জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন করেন। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে এমরুল কায়েস সহ তার সঙ্গীয় লোকজনকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশীদকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি উপজেলা। আমাদের এখানে উপজেলা পরিষদের এখানে ভোট কালকে। এখানে মিটিংয়ে আছি একটা।’ বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিমুল হক বলেন, ‘দিলে তো ছনুয়ারগুলো আমাকে দেয় নরমালি। এটা অফিসারের নাম যোগ হয়নি। তবে অভিযোগটা নথিভুক্ত হয়েছে। কালকে নির্বাচনটা শেষ হয়ে গেলে এরপরের দিন থেকে আমরা কাজ শুরু করবো।’