দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

সাতকানিয়ার খাগরিয়ায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। (২৭ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় খাগরিয়া গণিপাড়া ভোরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বি বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দিনকে দায়ী করেছেন।

অপরদিকে জসিম উদ্দিন বলেছেন সকালে তার শান্তিপূর্ণ গণসংযোগে বিনা উষ্কানীতে নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বি আকতার হেসেনের পালিত পেটুয়া বাহিনী নির্বিচারে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী আহত সকলেই নৌকার সমর্থক এবং তার কর্মী দাবী করলেও দোহাজারী হাসপাতালে আহতরা আকতার হোসেন ও তার গুন্ডাবাহিনীর গুলিতে আহত হয়েছেন বলে জানান।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জসিম উদ্দীন তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে গণিপাড়ায় গণসংযোগে গেলে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন এগিয়ে আসলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এতে লাটিসোঠা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হন। হামলায় আহতরা হলেন মো. শাহ আলম (৫৫), আহমদ হোসেন (৫০), মো. মারুফ, মো. মুহিবুল, ইসলাম খাতুন (৬০), মো. রফিক (৫২), মো. ফারুক (৬১), মুন্সি মিয়া (৫৫), আবদুল সালাম, আবছার উদ্দীন (৪৫), মো. সায়েদ (২৫), আবু সুফিয়ান (২১), মনির আহমদ (৬২) ও জাফর আহমদ (৫৫)।
আহত আবু সফিয়ান, মনির আহমদ, জাফর আহমদসহ অন্যান্যরা জানান, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জসিম উদ্দীন (মটর সাইকেল) তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বৃহস্পতিবার গণসংযোগে বের হন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিনি কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ভোরবাজার গণিপাড়া এলাকায় পৌছলে হঠাৎ বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকার প্রার্থী মো. আকতার হোসেনের কর্মী সমর্থকরা গুলি করতে করতে, লাটিসোঠা, নিয়ে গণসংযোগে হামলা চালায়। এতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জসিম উদ্দীনের ১৫ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। হামলার সময় বেশ কয়েকজন পথচারীও আহত হয় বলে জানা যায়। আহতদের দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন।

অপরদিকে নৌকার প্রার্থী আকতার হোসেনের অভিযোগ, সকাল বেলা নির্বাচনী মিছিল করা নিষেধ থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিছিল নিয়ে ৫নং ওয়ার্ড এলাকার সরু রাস্তা দিয়ে ভোর বাজার এলাকায় এসে সন্ত্রাসী কায়দায় আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুরসহ বাজারে আমার সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জসিম উদ্দীন জানান, বেলা ১১টার দিকে মিছিল সহকারে খাগরিয়া ভোরবাজার গেলে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ও আমার কর্মী সমর্থকদের উপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে ১৫ জন কর্মী সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়।
এ বিষয়ে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আকতার হোসেন হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দীন নিজেই সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে গুলি করে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এই কাজ করেছে এবং আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলসহ খাগরিয়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।