জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে শীতলপুর এলাকায় প্রায় ৭০ কানি জমিতে গড়ে ওঠা বিএম কনটেইনার ডিপোতে ৫০০ মিটারের একটি টিন শেডের ভেতর মজুদ ছিল বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পার অক্সাইড’ নামের দাহ্য রাসায়নিক। যেখান থেকে বিস্ফোণের সুত্রপাত হয়।

ডিপোতে বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করেছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান। বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিলেন বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন), পরিচালক (পরিবহন) ও পরিচালক (নিরাপত্তা)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন, বিএম ডিপোর ঘটনা তদন্তে টার্মিনাল ম্যানেজারকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহনাজ সুলতানা বলেন, রাসায়নিক যাতে সবদিকে ছড়িয়ে যেতে না পারে সেজন্য সেনাবাহিনীর শতাধিক সদস্য কাজ করছেন। আশপাশে কোনও নালা আছে কি-না তাও খুঁজে দেখা হচ্ছে। এসব রাসায়নিক যাতে সমুদ্রে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য চেষ্টা চালাচ্ছি।

এছাড়া আমদানি-রফতানি করা বিভিন্ন পণ্যও এ ডিপোতে রাখা হতো। শনিবার (৪ জুন) রাতে আগুন লাগার পর রাত ১১টার দিকে সেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসময় হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বাইরে ছড়িয়ে যায়।

বিএম ডিপোর জিএম (সেলস) নাজমুল আকতার খান জানান, এ ডিপোর ধারণক্ষমতা ১০ হাজার টিইইউসের বেশি। শনিবার ৪ হাজার ৩০০ টিইইউএস কনটেইনার ছিল। এর মধ্যে ৩ হাজার খালি কনটেইনার। রফতানি পণ্যভর্তি ৮০০ কনটেইনার। আমদানি পণ্যভর্তি ৪০০ কনটেইনার ছিল। হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের কনটেইনারগুলো রফতানির জন্য রাখা হয়েছিল।

তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময় দুই শিফটের ২ শতাধিক কর্মী ছিলেন ডিপোতে। আগুনে কেমিক্যাল বোঝাই কনটেইনার ছাড়াও কনটেইনার ফ্রেইট স্টেশন (সিএফএস) শেড পুড়ে গেছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সর্বপ্রথম মানুষের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছি। আমরা আগে উদ্ধার অভিযান শেষ করি। এরপর সব পক্ষকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

কনটেইনার ডিপোতে শনিবার (৪ জুন) রাতে আগুন লাগার পর রাত ১১টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন রয়েছেন।