চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বন্দরের গাড়ির শেডে পড়ে থাকা বিশ্বের বিখ্যাত ব্র্যান্ডের পুরোনো ১১০ গাড়ি নিলামে তোলা হচ্ছে। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে ল্যান্ড রোভার, মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ, লেক্সাস, জাগুয়ার, মিতসুবিশি জীপ। গাড়িগুলো কন্টেইনারে এবং খোলা অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর ও গাড়ির শেডে পড়ে আছে। নিলামে তোলার আগে এসব গাড়ি দেখতে পারবেন আগ্রহীরা।
আগামী ৩ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে ৪ নভেম্বর বেলা একটা পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে দু’দিনব্যাপী এই নিলাম পরিচালনা করা হবে।
এ ধরনের একেকটি গাড়ির দাম সাধারণত ১ থেকে ৪ কোটি টাকা। তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, নিলামে অংশগ্রহণকারীরা ‘যৌক্তিক মূল্য’ উদ্ধৃত করলেই তা বিবেচনায় নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে বাজারমূল্যের তুলনায় আশাতীত কম দামে যে কেউ একটি বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়ে যেতে পারবেন। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে মিৎসুবিসি পাজেরো ২৬টি, মার্সিডিজ বেঞ্জ ২৫টি, বিএমডব্লিউ ২৫টি, ল্যান্ডরোভার ৭টি, ল্যান্ডক্রুজার ৭টি, ১টি সিআরভি, লেক্সাস ৬টি, ফোর্ড ৫টি, জাগুয়ার ৩টি, ১টি দাইয়ু ও ১টি হোন্ডা।
ক্রেতারা গাড়িগুলো দেখে সরাসরি চট্টগ্রাম, ঢাকা, সিলেট ও মোংলাসহ পাঁচটি নির্ধারিত স্থানে দরপত্র জমা দিতে পারবেন। আবার অনলাইনে ঘরে বসেও নিলামে অংশ নিতে পারবেন। রাজস্ব বোর্ড ও চট্টগ্রাম কাস্টমসের ওয়েবসাইটে নিলামে তোলা পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ দুই-একদিনের মধ্যে আপলোড করা হবে বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো নিলামে তোলা হচ্ছে এসব গাড়ি। এর আগে চারটি নিলামে একটি গাড়িও বিক্রি হয়নি। তবে এবার গাড়িগুলো নিলামে বিক্রি করতে চায় কাস্টমস। সে জন্য নিলামে যেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দরদাতা অংশ নেয় সেই চেষ্টা চলছে।
কাস্টম সূত্র জানায়, পর্যটক সুবিধায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এক দশক আগে এসব গাড়ি এনেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ পর্যটকেরা। বন্দর দিয়ে আনার পর আটকে যায় সবকটি গাড়ি। কারণ শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার রোধে কড়াকড়ি আরোপ করে কাস্টমস। ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়ে খালাসের শর্ত আরোপ করার পরই খালাস না নিয়ে সটকে পড়ে পর্যটকেরা। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় এসব গাড়ির অনেকগুলোর চাকা ও ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেছে। ইঞ্জিনে মরীচিকা ধরেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার মো. আল আমিন বলেন, যৌক্তিক দর পেলে এবার নামিদামি ব্র্যান্ডের গাড়িগুলো বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হবে। সারা দেশ থেকে যেন সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রেতা নিলামে অংশ নেয় সে জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নিলামে তোলা গাড়ির মধ্যে সবচেয়ে দামি হলো যুক্তরাজ্যের ল্যান্ড রোভার গাড়ি। এ রকম সাতটি গাড়ি আছে। ১১০টি গাড়ির অর্ধেকই মার্সিডিজ বেঞ্জ ও বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় এসব গাড়ির অনেকগুলোর চাকা ও ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেছে।
নিলামে তোলা গাড়িগুলোর মধ্যে ১৫টি গাড়ি তৈরির পাঁচ বছরের কম সময়ে বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র লাগবে না। তবে বাকি গাড়িগুলোর জন্য দরকার হবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র। কেনার পর যাতে ছাড়পত্র সহজে মিলে সে জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।