জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম:
‘বাংলা একাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি সাহিত্যিক রাশেদ রউফ এমন একজন মানুষ যিনি ভাঙেন। কবির লেখায় রয়েছে প্রেম, প্রণয় ও ভাঙনের সুর। আর প্রকৌশলী আলি আখতার হোসেন শুধু গড়েন। দু’জন দুই মেরুর মানুষ। কবি ভাঙেন আর প্রকৌশলী গড়েন।’
শনিবার (২ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫ টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলরুমে রানী-মোহন গুণিজন সম্মাননা-২৪ পদক প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্যকালে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ.টি.এম পেয়ারুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু সেতু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু টানেল হয়েছে, দেশের উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু আমাদের নৈতিকতা অধঃপতনের দিকে যাচ্ছে। খুব কষ্ট হয়। এসব ভেবে। আজকে মার্চ মাস। বঙ্গবন্ধু এ মাসেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সদ্য গেল ভাষার মাস। সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা অনবত। আমরা বাঙালি আমরা বাংলাদেশি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে এক হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে রানী-মোহন শুণিজন সম্মাননা-২৪ প্রদান করা হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আলি আখতার হোসেন ও বাংলা একাডেমির পুরস্কার প্রাপ্ত কবি সাহিত্যিক রাশেদ রউফ কে সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান সিআইপি উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সঙ্গতকারণে উপস্থিত ছিলেন না।
অনুষ্ঠানে বাচিক শিল্পী আয়েশা হক শিমুর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন আগ্রাবাদ মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ ড. আনোয়ারা আলম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর রীতা দত্ত বলেন, ‘আজকে রানী-মোহন সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিত্বরা দু’জন দু’ভূবনের বাসিন্দা। যারা সম্মাননা পেয়েছেন তাঁদের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, ‘আমাদের সম্মাননা সংস্কৃতি বেড়ে উঠলে দেশ এগিয়ে যাবে। ভালো মানুষকে আমরা সম্মান করতে চেষ্টা করি। সমাজের গুণিজনকে আমরা সম্মাননা ও পুরস্কৃত করতে চেষ্টা করি। এতেই গুণিজন উৎসাহ পাবে।’
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি কক্সবাজার জেলার শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শিশু সাহিত্যিক আহসানুল হক বলেন, ‘গুণিজনদের সম্মান করা না হলে গুণিজন জন্মে না। আমরা আজ তেমন দুইজন গুণিজনকে সম্মাননা প্রদান করতে পেরে নিজেকে গর্ববোধ করছি। প্রকৃত গুণিজন হিসেবে প্রকৌশলী আলি আখতার হোসেন ও কবি রাশেদ রউফের হাতে পুরস্কার দেখতে পেরে আমি অনেক খুশি।’
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে প্রকৌশলী আলি আখতার হোসেন বলেন, ‘রানী ও মোহন দুজনকেই আমি শ্রদ্ধাভরে স্যালুট জানাতে চাই। আমি গুণি কিনা জানি না। আমাদের অর্গানাইজেশন কিন্তু গুণিজন। সম্মাননা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। এ সম্মাননা পাওয়ায় আমাকে আরো কঠিন করে তুলবে। কেননা, পুরস্কার বা সম্মান পাওয়া মানেই দায়িত্ব বেড়ে যাওয়া।’
কবি সাহিত্যিক রাশেদ রউফ তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমি কোন পুরস্কার বা সম্মাননাকে ছোট হিসেবে দেখি না। সম্মান কখনো নগণ্য হয় না। রানী মোহন গুণিজন সম্মাননা পদক পুরস্কারটি আমি বন্ধুদের উৎসর্গ করলাম। এটা এটি বড় সম্মান হিসেবে গ্রহণ করলাম।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এ.কে.এম. এহেছানুল হায়দর চৌধুরীসহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠান আয়োজন করেন রানী-মোহন সাহিত্য পরিষদ (চট্টগ্রাম)। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অরুপ বড়ুয়া। নিত্য নাচে মঞ্চ মাতিয়ে তোলেন বায়েজিদ রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা।