আলোচক: এম সুলতান আহমদ মনিরী কবি- প্রাবন্ধিক- সমাজ গবেষক, রামু ককসবাজার।

সংকলক: অধ্যাপক রায়হান উদ্দিন।

প্রকাশকাল:২১ শে ফেব্রুয়ারী ১৯১৯ ইং

ককসবাজারের স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, কবি, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীতজ্ঞ, বন্ধুবর অধ্যাপক রায়হান উদ্দিনের সাথেস ম্প্রতি রামু খিজারী সরকারী হাই স্কুলে র “আলহাজ্জ ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী মিলনায়তনে” এক জনাকির্ন স্বরণ সভায় সাক্ষাৎ হলে তিনি তার সম্প্রতি প্রকাশিত“উকিল মোহাম্মদ আলীর ডাইরী’ নামক ব্যতিক্রমধর্মী বইটি আমার হাতে তুলে দেন। তিনি নাকি বইটি বিশেষত আমাকে দেওয়ার জন্যই সাথে করে নিয়ে এসেছেন।এটি হাতে পেয়ে আমি নিজকে অত্যান্ত ধন্য ও গৌরবান্বিত মনে করলাম। বাড়ীতে এসে মলাট উল্টাতেই মুগ্ধ হয়ে দেখি প্রচলিত অর্থে এটি কোন সাধরন পুস্তক নয়, বরং খুবই ব্যতিক্রমধর্মী। বইটিতে বর্ণিত হয়েছে ককসবাজার, রামু ও চট্টগ্রাম শহরের বিগত শতাদ্বির শিক্ষা- সংস্কৃতি, আর্থ -সামাজিক ও পরিবশেগত পরিস্থিতির এক আনকোড়া রেখা চিত্র। গ্রন্থটির দ্বারা আগ্রহী পাঠক সম্প্রদায়কে নিকট অতীতের যৎকিঞ্চিত স্মৃতি তাড়িত করতে পারব ভেবে আমার ফেইসবুক আইডির সংক্ষিপ্ত প্লাটফর্মে হলেও দু’কলম লিখতে প্রলুব্ধ হলাম। আসলে কোন মানুষের সারা জীবনের ডাইরীও কোন সম্পূর্ন জীবনী গ্রন্থ হতে পারেনা।আর ডাইরীর বক্ষমান আলোচনাটিও হয়ত সেরকম পাুর্ণাঙ্গতা পায়নি। জীবনী গ্রন্থসমুহ মুলত কোন ব্যক্তিকে ঘিরে আবর্তিত হলেও এতে বিশেষ একটি সময়কালের সত্য ইতিবৃত্য প্রতিফলিত হয় বলে এগুলিকে ইতিহাসের দলিল রুপে গন্যকরা চলে।এ ক্ষেত্রে কারো রোজনামচা বা ডাইরী হলেতো কথাই নেই।আলোচ্য গ্রন্তটিও তেমনি এক আকর গ্রন্থ।প্রকাশকের বর্ণনায় তাঁর বাবার “আত্মচরিতটি তখন বাঁশের টুকরো কেটে কলম বানিয়ে দোয়াতের কালি দিয়ে লিখা হয়েছিল।এতে তৎকালীন ককসবাজারের শুধু নয়, পার্শবর্তি রামু এবং দূরবর্তী চট্টগ্রাম শহর সমেত তাঁর বিচরন ক্ষেত্রের বিশদ চিত্র অতি উজ্জলভাবে ফুটে উঠেছে সংকলকের ভাষ্যে“সাম্প্রতিক সময়ে ডাইরীটি ককসবাজারের তুলনামুলক ধর্মের গবেষক ও সুসাহিত্যিক, কবি আহমদুল্লার নজরে পড়লে এটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব হৃদয়ঙ্গম করে তিনি এটি ছাপার অক্ষরে তাগিদ দেন। বিশেষত তাঁরই উৎসাহেও অলংকরনে ডাইরীটি পুস্তকাকারে সুহৃদ পাঠকের করকমলে তুলে দেয়া সম্ভব হলো। প্রকাশ থাকে যে আগেকার দিনে এত বেশী প্রকাশনার সুযোগ না থাকলেও সৃজনশীল মননের মানুষেরা নিরবে নিভৃতে নিয়মিত, অনিয়মিত প্রচুর ডাইরী লিখতেন। এসব ডাইরীর কোন কোনটি ইতিহাস ও সাহিত্যমানে এত উন্নত হতযে পরবর্তি প্রজন্মের উত্তরাধিকারীগনের অথবা কোন সমঝদার মানুষের হাতে পড়লে , তাঁরা এসব রোজনামচা বা দিনলিপি পুস্তকাকারে প্রকাশে উদ্বুদ্ধ হতেন, যেমন আলোচ্য গ্রন্থটি। আরো বড় দৃস্টান্ত হিসেবে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান“বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত ডাইরি” এর উল্লেখ করা যেতে পারে। যা স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে চিরকালের জন্য জাতীয় প্রামান্য দলিলে পরিণত হয়ে রয়েছে।আর আলোচ্য ডাইরিটিও অন্তত তৎকালিন বৃটিশ ইন্ডিয়ার শেষভাগের ককসবাজার, রামু চট্টগ্রামের একটি খন্ডকালিন সময়ের স্পস্ট দর্পন হিসাবে গন্য করা চলে। তাহলে কেমন ছিল এসব এলাকার বিগত শতাদ্বির প্রথমার্ধের কয়েক দশকের আটপৌরে,আর্থ সামজিক,সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার স্বরুপ? তখন ককসবাজারে (যেহেতু সে সময় চট্টগ্রাম শহর ছাড়া পৌরসভা হয়েও ককসবাজারকে শহর হিসেবে অভিহিত করা হতনা)একটি মাত্র মিডল স্কুল ছিল।ডাইরীর ভাষ্যে “আজ ষষ্ঠ শ্রেণীর জীবন স্মৃতি দৈনন্দিন পড়া ও তৎসঙ্গে উত্তম মাধ্যম বেতের muscle excercise, শরীর ও মন গঠন করিয়া তুলিত। ১৯২৮ -২৯ সালে উকিল মোহাম্মদ আলী ষষ্ট শ্রেনীতে ছিলেন।দিনের শেষে খেলা ও সূর্যাস্তে সমুদ্র তীর ভ্রমন, নিশিথে সুনিদ্রা প্রদান করিত। কখনো ডিবেটিং কখনো বোর্ডিং এর বারান্দায় হৈহুল্লোড় ও তরমুজ ভোজন, জিমনেশিয়ামে গমন, কখনো শিক্ষকগনের নেতৃত্বে সমুদ্রের চলে শিক্ষাভ্রমন, কখনো গানবাজনা ছিল নিত্য দিনের ব্যস্ততা।তখনকার হেডমাস্টার নাকি প্রাইভেট পড়াতেন এবং পক্ষপাত করতেন। এ নিয়ে নানা কথা শুনতাম। কখনো চলত ফুটবল প্রতিযোগিতা। টিমগুলো ছিল রামু দল, টাউনক্লাব টিম , বুড্ডিস্ট টিম ইতাদি অধিকাংশ ম্যাচ হতো ক্রীড়া সংস্কৃতির পিঠস্থান রামুতে। শতবিচ্ছিন্ন সড়কে তখনো গাড়ী চলাচল শুরু হয়নি। কাঁকখালী নদীর উজান ভাটিতে নৌকায় চড়ে অথবা পায়ে ঁেহটে যাতায়াত হতো। সন্ধয়ি ম্যাচ শেষে প্রায় সময় হাঁটা পথে ককসবাজারে ফিরে আসা সম্ভব হতনা। সেই পরিস্থিতিতে দর্শকসহ ৩০/৪০ জনের বহরকে রামুর কিছু স্বচ্ছল পরিবারের ক্রীড়ামোদী গৃহকর্তাগন এক এক দলে ভাগ করে মেহমানের মতো স্থান দিতে কখনো কুন্ঠিত হতেন না। লেখক এমন সব অতিথী পরায়ণ অভিজাত পরিবারের মধ্যে শ্রীধন মহাজন, মনিরুজ্জমান ,ঈশান পাল, দেবেন্দ্রবাবুর বাসা প্রমুখ এবং প্রতিষ্টানের মধ্যে ফরেস্ট অফিস, খাসমহাল, ডাকবাংলো, বার্মিজ চেরাং(সরাইখানা) ইত্যাদির নাম উলেœখ করে গেছেন যেখানে প্রায় সময় ভাত ডাল হয়ে যেত আর ডাল হয়ে যেতো ভাত। পথচারী আর পাশের বাড়ীর মহিলারা নাকি তামাশা দেখতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।বাড়ীতে বাড়ীতে খাওয়া দাওয়া ও অতিথী পরায়নতার ভূয়সী প্রশংসা সত্বেও এখানে অবস্থান কালিন অনেক নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। নড়বড়ে খোলা লেট্রিনে দুর্ঘটনা ঘটার হাস্যকর বর্ণনা এগুলির অন্যতম। বনেদী মুসলমান বাড়ীতে হিন্দু ছেলেদের মুসলমানি নাম দিয়ে চালিয়ে নেয়ার চালাকির কথারও উল্লেখ আছে। এ সব প্রবাসে গানবাজনা, পুঁথিপাঠের আসরে যোগদান ও অন্য নির্দোষ আনন্দ ফূর্তির বিবরণ পাওয়া যায়। যেদিন ম্যাচ জিততেন সেদিন সবাই একটু বেসামাল হয়ে পড়তেন। পারত পক্ষে হেঁটে ককসবাজার চলে যেতেন। রামু থাকলেও প্রবাসে আছেন সেটা ভুলে যেতেন। ছোটখাট গোলমাল হলেও কখনো সে সকল আজকালকার মতো অত সহিংস রুপ ধারন করতোনা। এর পরও ডাইরীর সুবাদে লেখককে খুবই নীতিনিস্ট, ভদ্র ও নায়কোচিত ছিলেন বলে মনে হয়। সেই সঙ্গে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দুরন্ত ও দু:সাহসিক মনে করারও প্রমান মেলে।যেমন তীব্র এক ঝড়োরাতে তাদের একবার রামুল শিকলঘাটে প্রমত্তা বাঁকখালী নদী সাঁতরে পার হওয়ার ঘটনা। উপরোক্ত জমিদার ঈশান পালের বাড়ী ছিল নদীর দক্ষিণ পাড় বরাবর অনেকদূর পশ্চিমে। গভীর রাতে অপর পাড়ে মাঝি নৌকা তালাবদ্ধ করে বাড়ি চলে গিয়েছিল। অনেক ডাকাডাকিতেও সাড়া মেলেনি। ১০/১৫ জনের দল নিয়ে নদী পার হতে হবে। কারন সেইবার এই দলটি ঐ জমিদারের ভাগে পড়েছিল। নদীর ঘাটে হৈ চৈ এর মধ্যে এক দু:সাহসিক ছেলে ছিদ্দিক নৌকা নিয়ে আসার জন্য হঠাৎ তীব্র স্্েরাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দায়বোধ থেকে লেখকও তাকে অনুসরন করে ঝাপ দেয়। তখন বিপদ বুঝে লেখককে টেনে তুলতে তার বন্ধু বজল জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে লেখকের হাত ধরে ফেলে টেনে কুলে তুলার ব্যর্থ চেস্টা করে। পরস্পরে কেউ হাত ছাড়েনা। অগত্যা বিপদজনক ভাবে দু’জনেই এক হাতি সাঁতরিয়ে অনেকদূর ভাটিতে ভেসে, নির্ঘাত মৃত্যুকে পাশ কেটে কোনভাবে অপর পাড়ে উঠে। অগত্যা উজান হেঁটে এসে তিনজন মিলে তালাবদ্ধ নৌকাটি খুটি সহ এ পাড়ে বেয়ে এনে সকলে মিলে ঘাট পার হয়। অন্ধকার কালোরাতে এটা ছিল নিশ্চিত মৃত্যুর ঝুঁকি। অতপর সেকালে ৪র্থ শ্রেণীতে পড়াকালিন তিনি প্রথমবার ককসবাজারের কস্তুরাঘাট হতে গধষষধৎফ ংঃবধসবৎ,এ চড়ে চট্টগ্রাম শহরে বেড়াতে যাবার বর্ণনা পাই। সেকালে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার একমাত্র মেট্রিক পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল চট্টগ্রাম মিউনিসিপাল হাই স্কুল। তিনি s s Mavis steamer, যোগে চট্টগ্রাম গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। পরীক্ষা শেষে ‎ Nhila steamer liner যোগে ফেরত আসেন। সে কালে পপানির জাহাজে চেপে কয়েকদফা সমুদ্র পথে চট্টগ্রাম অভিযান ছিল আজকালকার বিলেত গমনের চেয়েও রোমাঞ্চকর ও দু:সাহসিক অভিযান। চট্ট্গ্রাম পর্যন্ত তটরেখায় অপরুপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য, কুতুবদিয়া ও মহেষখালী চ্যানেলে অসংখ্য সাম্পানের কেঁকুঁত শব্দ, মাছ ধরা,উপকুলে চাষাবাদ ছবির মত ঘরবাড়ীর বিচিত্র সব হৃদয়গ্রাহী বর্ণনাতো রয়েছেই।পৌছঁতে সকাল থেকে সন্ধা পেরিয়ে রাত হয়ে যেতো। সেখানেও অবস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে ভাগ হয়ে ঘোড়ার গাড়ীতে চড়ে আত্মীয় স্বজনের বাসার খোঁজ নিতে হতো।কিছু ছাত্র বা পরীক্ষার্থী হোটেলে উঠত। চট্টগ্রামের লালদীঘি ও আন্দরকিল্লা এলাকায় ভিকটোরিয়া হোটেল ইত্যাদীর কিছু নামোল্লেখ আছে।

এক সময়Great ring Curcus নামে বিখ্যাত সার্কাস তারা বেশ উপভোগ করেছিলেন বলে উল্লেখ আছে। ঘটনাচক্রে চট্টগ্রামে কলেজে অধ্যয়নকালিন ১৯৩০ ইং ঐতিহাসিক রোম হর্ষক অস্ত্রাগার লুন্ঠনের ঘঠনাটি ঘটে। তখন ঘটনাচক্র লেখক ছবি দেখতে সিনেমা প্যালেসে ছিলেন। সে সময় তিনি যে বিড়ম্বনা ভোগ করেন সেটা এবং বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটের বিষদ ব্যাখ্য করেছেন। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা কৌশল খাটিয়ে দু’একদিন আগে প্রচার করেছিল যে ব্যাংক ডাকাতি হবে। সেই ভয়ে প্রশাসনকে সংবেদনশীল এলাকা তেকে কমার্সিয়াল এলাকায় নিয়ে আসা হয়। ফলে সামরিক এলাকায় প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়ে পড়ে। নির্দ্দিস্ট দিন বিদ্যুত ও টেলিফোন ব্যবস্থা অচল করে, সকল ছোটগাড়ীর ড্রাইভারদের বন্ধীরেখে গাড়ী নিয়ে আক্রমন করে। চট্টগ্রাম অবস্থানকালিন কলেজের হোস্টেল জীবনের ছাত্র ও প্রফেসর সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনার ঘাত প্রতিঘাতের বিবরণতো রয়েছেই।

সেই সময় চট্টগ্রাম কলেজের প্রিন্সিপালগণ ছিলেন Mr. Rams Bottom, Mr. Patek বাড়ী ছিল ইংলন্ডের Devonshire। অন্যদের মধ্যে অপুর্ব কুমার দে , এম এ অক্সোন, প্রিন্সিপাল রায়বাহাদুর পদ্মিনী ভুষন রুদ্র , প্রফেসর মৌলভী নুরুল আলম প্রমুখ। উনারা সকলে খুবই জ্ঞানী ধার্মিক ও গুনি বলে উল্লেখ আছে। পড়ার বিষয় ছিল Pure art, English, Bengali, Arithmatics. অনেকে পড়াপ মুখস্ত করে নাম করার চেস্টা করতো। কিন্তু লেখক মুখস্ত করাকে ঘৃণা করতেন। ইংরেজীর একটি ক্লাশে বরং বানিয়ে ইংরেজী উত্তর দিয়ে সকলে চেয়ে বেশী প্রশংশিত হয়েছিলেন বলে লিখেছেন। একটি বিষয় লক্ষনীয় যে এত ঘটনার ঘঠানোর মধ্যে কোন মেয়ে ঘটিত, ভালোবাসা বা প্রণয়ের ব্যাপার স্যাপার , ডাইরীটিতে চোখে পড়ে নাই। ছেলে সহপাঠিদের মধ্যে কারো কারো সঙ্গে সুখে দু:খের একটু বেশী ঘনিষ্টতা ছিল মাত্র। তবে লেখক একবার নাকি সাইকেল চালিয়ে আসতে ঈদগাঁ রামুর মাঝামাঝি কোথাও একটি ভাঙ্গা সেতুর জলাভুমির সম্মুখিন হন। নড়বড়ে সেতুর এক অংশ উধাও।অ পানিতে অসংখ্য জোঁক। জলে কুমির ডাঙ্গা বাঘ’ প্রবাদের মত পরিস্থিতি! অগত্যা কিছু পানির মধ্যে, কিছু ভাঙ্গা সেঁতুতে, সাইকেল কাঁধে করে অত্যান্ত বিড়ম্বনার সহিত খাদটির পার হওয়ার সময় নিকটবর্তী একটি কুঁড়ে ঘর হতে খুবই সুন্দরী একটি মেয়ে নাকি সারাক্ষণ করুন চোখে দৃশ্যটি দেখে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল কাউকে পেলে সাহায্যের জন্য পাঠাত আরকি।রাস্তায় উঠার পরও নাকি তার উদাস দু’টি চোখ যতক্ষন দেখা যায় সারাক্ষন শুধু তাকেই অনুসরন করছিল। সেই স্মৃতির মায়া তিনি কেন যেন অনেক দিন মনের মনিকোটায় বহন করছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন।যা হোক, হতে পারে অনেক সময় কোন বড় ঘটনার ছেয়ে ছোট ঘটনাই মনের গভীরতর খাদ সৃস্টি করে।যেমন আলোচ্য গ্রন্থটি। অনেক পুস্ককের ভীড়ে এই ছোট সাইজের দিনলিপিমুলক বইটির কেন যেন আমাকে বেশ টেনেছে! বিশেষত সেজন্যই এটির স্বাদ ও রস ভোগে বিদগ্ধ পাঠকগনকে অংশভোগী করতে দু’কলম লিখতে স্বত:প্রবৃত্ত হলাম মাত্র। পরিশেষে, সবকিছু মিলে, বিশেষত সাবলিল লিখার হৃদয় ছোঁয়া বৈশিষ্টে, সত্য বর্ণনায় ভাষ¦র, এই অনন্য ডাইরী সংকলনটির বহুল প্রচার ও সত্যিকার পাঠক প্রিয়তা কামনা করি।